মন যেখানে যেতে চায় বারবার
জামশেদ আলম রনি
সমুদ্রের প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে।তাইতো সমুদ্রের টানে বারবার ঘুরতে আসেন অনেকেই।এই অপার সৌন্দর্যের কোলে খেলা করে ঝিনুক,মুক্তা, বালি আরো কত কি! হ্যাঁ, বলছিলাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কথা। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত আর সৌন্দর্য নগরী কক্সবাজার।
কী আছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে? প্রতি বছর লাখ লাখ দেশী-বিদেশী পর্যটকে মুখরিত থাকে এ নগরী। কিসের টানে ছুটে আসেন সবাই? আপনার জানার এ আকাঙ্খাকে নিরাশ করবে না প্রিয় এ সৈকত। প্রকৃতি যেন দু হাত মেলে তার সব সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে কক্সবাজারকে ঘিরে।
কী নেই এখানে? সেন্টমার্টিন দ্বীপ,মহেশখালী,কুতুবদিয়া,সোনাদিয়া,শাহপরীর দ্বীপের পরতে পরতে সুন্দরের হাতছানি। ১২০ কি.মি.বিস্তৃত সমুদ্র সৈকতে আপনি ঘুরে আসতে পারেন সবাই মিলে। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখলে মন ছুঁয়ে যাবে। ভীষণ ইচ্ছে করবে সমুদ্রের ঢেউয়ে লাফ দিয়ে স্নান করতে। এটি চিন্তা করলে কেমন আন্দোলিত হয় মন, একবার ভাবুন তো!
সমুদ্রপ্রেমী মানুষদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। তাইতো ছুটি পেলে অনেকেই আপনজনকে সাথে নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে ভালো কিছু সময় কাটাতে চলে আসেন এখানে একটু স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে; অথবা পরিবারের সবাই মিলে। বন্ধুদের সাথে হৈইহুল্লর আর নিরেট এক অপার আনন্দে মেতে উঠতে পারেন। সারাবছর হইচই আর উৎসবের নগরীতে পরিপূর্ণ থাকে কক্সবাজার। শীতকালে বিশেষ করে ডিসেম্বর-মার্চ পর্যন্ত পর্যটকে ভরপুর থাকে এ নগরী। এছাড়া থার্টি ফাস্ট নাইটসহ বিশেষ দিবসগুলোতে ভীড় লেগেই থাকে।
যা কিছু উপভোগ করবেন কক্সবাজারে এসেঃ
সাগর, নদী, পাহাড়ের এক অপূর্ব সমাহার কক্সবাজার। রূপসী এ শহরে বালির আঁচড়ে কত প্রেমের স্বাক্ষ্য রেখে গেছেন নাম না জানা কত বন্ধু! উত্তাল সমুদ্রের গর্জন আপনাকে খুব কাছে টানবে।
শীতল আর রোমাঞ্চিত অনুভূতিতে ভরে উঠবে আপনার মন। সাগরের সুবিশাল মায়ারী গৌধূলী আর সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য কিছুতেই মিস করতে চাইবেন না আপনি। সমুদ্রস্নানে নিজেকে বিলীন
করে দিতে চাইবে মন। রাতের নিস্তব্ধতা অন্যরকম নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করে। সেই নির্জনতায় প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে আলাপচারিতায় ব্যাকুল হতে চাইবে আপনার মন।
সমুদ্রের পাশে আছে বিশাল ঝাউ বাগান। তরুণ-তরুণীদের উচ্ছ্বাস আর জলক্রীড়া দেখতে যেতে পারেন লাবনী পয়েন্ট কিংবা কলাতলী বীচে। নরম বালুচরে রাজ কাঁকড়ার দৌঁড়ঝাপ তো আছেই।
গভীর সাগরে মাছ ধরে জেলেদের ফিরে আসাতেও আছে মুগ্ধতা। স্পীডবোড, খোলাজীপে কিংবা ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানোর মাঝে আছে অন্যরকম আনন্দ। সমুদ্রে স্নান করে মুহুর্তটি ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে পারেন। এছাড়াও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন বার্মিজ মার্কেট, লাইট হাউজ, শুটকীপল্লী কিংবা ঝিনুক মার্কেটে। রাতের বেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পুড়ে খেতে ভুলবেন না যেন।
বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতে সংস্কৃতির এক বিশাল আদান-প্রদানের সুযোগ তো থাকছেই এখানে। চাকমা এবং ঐতিহ্যবাহী রাখাইন সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক জীবনের মুগ্ধতাও আপনাকে কাছে টানবে। সবশেষে তৃপ্তিমাখা মন নিয়ে সৈকতকে বিদায় জানাবেন আবার ফিরে আসার জন্যে। সত্যিই সৈকতের নান্দনিকতা আমাদের মনকে বিশালতায় ভরিয়ে দেয়। এতে দেহমন সজীব হয়,উদার হয় দৃষ্টিভঙ্গী।
=====